কমাতে লেবু-মধু পানীয়
in Diet Tips, Fitness, Healthy Living, Healthy Recipe, Losing Weight Tags: Diet Tips, Healthy Living, Losing weight, Metabolism
ওজন কমাতে অনেকে অনেক কিছু পান করেন বা খান| যেমন: ওজন কমানোর চা, সোনা পাতা, ওজন কমানোর ওষুধ ইত্যাদি| এগুলোর কোনো কার্যকারিতা আছে কিনা তা সন্দেহ আছে| থাকলেও এগুলোর side effect থাকতে পারে| কিন্তু প্রাকৃতিক উপাদান মধু ও লেবু আসলেই যে কার্যকরী, তা পরীক্ষিত এবং সারা বিশ্বে সমাদৃত ও স্বীকৃত | ওজন কমাতে দুটি প্রাকৃতিক উপাদান লেবু ও মধুর পানীয় সম্পর্কে অনেকেই জানেন | ওজন কমানো ছাড়াও লেবু ও মধুর অনেক গুনাগুন আছে|
কেন ওজন কমায় ?
মধুতে যদিও চিনি থাকে, কিন্তু এতে ভিটামিন ও মিনারেল থাকার কারণে এটি সাধারণ চিনির মত ওজন না বাড়িয়ে, কমায়| কারণ সাধারণ চিনি হজম করতে আমাদের শরীর নিজের থেকে ভিটামিন ও মিনারেল খরচ করে, ফলে এই সব পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হয়| এই সব উপাদান ফ্যাট ও cholesterol কমাতে বা ভাঙ্গতে সাহায্য করে| ফলে যখন আমরা বেশি চিনি খাই, তখন অধিক ক্যালরি শরীরে জমা ছাড়াও এইসব পুষ্টি উপাদানের চিনি হজম করতে অতিরিক্ত খরচ হওয়ায় এই সব পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হয়| তাই ওজন বাড়তে পারে| কিন্তু মধুতে এসব উপাদান থাকার ফলে এগুলো হজমে সহায়ক এবং ফ্যাট ও cholesterol কমায় | তাই এই পানীয় ওজন কমায় |তাছাড়া সকালে উঠেই শরীর যদি পানি জাতীয় কিছু পায়, তবে তা হজম শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে| ফলে একই রকম শারীরিক পরিশ্রম করেও আপনার হজম শক্তি বৃদ্ধির কারণে ওজন কমতে পারে|
লেবু-মধু পানীয় বানানোর প্রণালী:
এক গ্লাস হালকা বা কুসুম গরম পানি, অর্ধেক/২ চা চামচ লেবুর রস, এক চা চামচ মধু | গরম পানিতে লেবু ও মধু মিশিয়ে পান করুন লেবু-মধু পানীয়| আপনি চাইলে এর সাথে সবুজ চা (Green Tea) মেশাতে পারেন|
লেবু-মধু পানীয়
লক্ষ্য রাখবেন:
- আগে পানি হালকা গরম করে, তারপর তাতে লেবু ও মধু মেশাবেন| মধু কখনই গরম করতে যাবেন না|
- যদি ঠান্ডা পানিতে এটি পান করেন, তবে বিপরীত ফল হবে, মানে আপনার ওজন বাড়বে|
লেবু-মধু পানীয়র উপকারিতা:
- এই পানীয় শরীর থেকে টক্সিন বের (detoxify) করে| শরীরের ভেতরের নালী গুলোর সমস্ত ময়লা বের করে দেয়
- metabolism/হজম শক্তি বাড়ায়, ফলে ওজন কমে
- ঠান্ডা লাগলে এই পানীয় কফ বের করতে সাহায্য করে| এবং ঠান্ডা লাগলে, গলা ব্যাথা করলেও এটি উপকারী |
- এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
- শরীরের শক্তি বাড়ায়, অলসতা কমায়
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
মধুর উপকারিতা:
মধুতে glucose ও fructose আলাদা ভাবে থাকে,কিন্তু চিনিতে তা একসাথে থাকে|fructose তাড়াতাড়ি glucose এর মত শরীরে ক্যালরি হিসাবে জমা হয় না| তাই চিনির মত মধু সহজে ক্যালরি জমা করে না| ফলে অল্প মধু খেলেও ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কম|
- মধু শরীরকে রিলাক্স করে, মনকে প্রফুল্ল রাখতে সাহায্য করে এবং সহজে ঘুম আনতে সাহায্য করে
- মধু একটি প্রাকৃতিক এন্টি বায়োটিক, যা শরীরের সমস্ত ক্ষতিকর bacteria কে মেরে ফেলে infection দূর করে | ফলে শরীরের কাজ করার প্রণালী উন্নত হয়, এবং হেলদি থাকে
- মধু হজমে সহায়ক | তাই বেশি খাবার খাওয়ার পরে অল্প মধু খেতে পারেন
- মধু ফ্যাট কমায়, ফলে ওজন কমে
- মধু natural sweetener| তাই মধু সহজে হজম হয়|
- চোখের জন্য ভালো
- গলার স্বর সুন্দর করে
- শরীরের ক্ষত দ্রুত সারায়
- ulcer সারাতে সাহায্য করে
- বিভিন্ন রকম রোগ সারায়
- নালী গুলো পরিষ্কার করে
- ঠান্ডা লাগলে, জ্বর, গলা ব্যাথায় ভালো ওষুধ হিসাবে কাজ করে
- মধু Anti-oxidant| ত্বকের রং ও ত্বক সুন্দর করে| ত্বকের ভাজ পড়া ও বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে|
- বুদ্ধিবৃত্তি বাড়ায়
- শরীরের সামগ্রিক শক্তি বাড়ায় ও তারুণ্য বাড়ায় |
লেবুর উপকারিতা:
- লেবুতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি, যা antiseptic ও ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে
- এছাড়া লেবুতে থাকে Calcium, Potassium, Phosphorus, Magnesium , যার কারণে হাঁড়, ও দাঁত শক্ত হয়
- লেবুর এই উপাদান গুলো টনসিল ও urine infection প্রতিরোধ করে
- এছাড়া লেবুর ভিটামিন সি ক্যান্সারের সেল গঠন প্রতিরোধ করে
- লেবু বুক জ্বালা, ulcer সারাতে সাহায্য করে
- Arthritis এর রোগীদের জন্য ভালো |কারণ লেবু diuretic |
- লেবু শরীরের ক্ষতিকর bacteria গুলোকে ধবসংশ করে
- লেবু antioxidant ও anti-aging
- তাই ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি ত্বক পরিষ্কার রাখে, Acne দূর করে| ত্বকের বুড়িয়ে যাওয়া রোধ করে| Black heads ও ত্বকের ভাজ পড়া কমায়
- লেবু ওজন কমাতে সাহায্য করে
- লেবু হজমে সহায়ক ও হজমের সমস্যা দূর করে
- কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
- শরীরের ভিতরের toxin দূর করে, অন্ত্র নালী, Liver ও পুরা শরীরকে পরিষ্কার রাখে
- পেট ফুলা (bloating) ও flatulence এর সমস্যা কমায়
- রক্ত পরিশোধন করে
- ঠান্ডা লাগলে, জ্বর, গলা ব্যাথায় ভালো ওষুধ হিসাবে কাজ করে|
- শ্বাস কষ্ট ,হাপানি হলে ভালো কাজ করে|
- শ্বাস নালীর ও গলার infection সারাতে সাহায্য করে
কখন খাবেন?
সাধারণত সকালে উঠেই প্রথম পানীয় হিসাবে খালি পেটে এটি খাওয়া হয়| এর কিছুক্ষণ পরে সকালের নাস্তা খেতে পারেন|
সাবধানতা :
- যাদের gastric এর সমস্যা আছে তারা অবশ্যই এটি খালি পেটে খাবেন না | কারণ লেবু acidic| তাই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে এটি খাবেন|
- তাছাড়া লেবুর acid দাঁতের enamel এর জন্য ক্ষতিকর, তাই এই পানীয় খাবার সাথে সাথে কুলি করবেন, অথবা পানি খাবেন|
একটা কথা মনে রাখবেন, ওজন কমানোর জন্য এই পানীয় শুধুই সহায়ক মাত্র| সম্পূর্ণ ওজন কমানোর প্রক্রিয়াতে অবশ্যই থাকবে হেলদি/ balanced diet, নিয়মিত শরীর চর্চা এবং হেলদি জীবন যাত্রা
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন